ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪

পাহাড়ধস ও বন্যাঝুঁকিতে দুই লাখ রোহিঙ্গা নারী ও শিশুসহ নিহত ৫

কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া  ::   কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়া- টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থানকারী প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা পাহাড়ধস ও বন্যাঝুঁকিতে রয়েছে। বৃষ্টি ও ঝড়োহাওয়ায় বেশ কয়েকটি পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ধস ও পানিতে ভেসে এক নারী ও চার শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার বসতঘর। এর মধ্যে ৩ শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। এসব রোহিঙ্গা পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে সাথে সাথে ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে।

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩২টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। এসব রোহিঙ্গার অস্থায়ী বসবাসের জন্য পাহাড়ি এলাকায় এই পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ১৩ হাজার ঝুপড়ি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজারের অধিক পরিবারের প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা পাহাড়ধস ও বন্যাঝুঁকিতে রয়েছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও ঝড়োহাওয়ায় বেশ কয়েকটি পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। পাহাড়ধস ও পানিতে ভেসে এক নারী ও চার শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়ার জামতলী ক্যাম্পে পানিতে ভেসে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত কয়েক দিনে পাহাড়ধসে উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পে এক নারী, হাকিমপাড়া ক্যাম্পে ও মধুরছড়া ক্যাম্পে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ঝড়োহাওয়া ও পাহাড়ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজারের বেশি বসতঘর। এর মধ্যে ৩ শতাধিক ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে। বৃষ্টির পানির তোড়ে অনেক সড়ক হাঁটা-চলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ধসে বসতঘর ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি ভোগান্তি ও আতঙ্কিত রোহিঙ্গারা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা পাহাড়ধস ও বন্যাঝুঁকিতে থাকার কথা জানিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক জানান, গত সপ্তাহে ৩ শতাধিক ঘর ভেঙে গেছে। তাদের অন্যত্র সরিয়ে সাথে সাথে ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এ বিষয়ে সজাগ রয়েছে।

বর্ষা মওসুমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়ে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার জানালেন গত দুই বছরে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলেও আরো কঠোরভাবে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বিশাল এ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে রক্ষা এটিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, ভারী বর্ষণের কারণে পাহাড়ধস ও বন্যার আশঙ্কায় প্রতিটি ক্যাম্পে মাঝিদের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সতর্ক করা হয়েছে। অতি ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসরতদের আপাতত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় ক্যাম্পের ভেতরে থাকা মসজিদ, সাইক্লোন শেল্টার, আশপাশের স্কুলের ভবন প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক ও শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

পাঠকের মতামত: